কোচবিহার,১৯ জানুয়ারি :-আজ কুচবিহার রাসমেলা ময়দান থেকে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মোঃ সেলিম বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন এটা যদি সরকারের বড় সাফল্য হতো, তাহলে সরকার সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টি ঘোষণা করতো। এত ঢাকঢাক গুড় গুড় কেন? বৃহস্পতিবার কোচবিহারে কেএলও চিফ জীবন সিংহের দিল্লিতে গিয়ে আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বললেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এদিন তিনি বলেন,এতদিন যাকে খোঁজা হচ্ছিল, সকলেই জানতেন বিজেপির সাথে তার একটা যোগ রয়েছে। তারপর এই এজেন্ট আসামে গিয়ে আত্মসমর্পণ করল। প্রথমত কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত বলছে না,এই বিষয়ে তাদের কি পরিকল্পনা। আসলে কেন্দ্রের সরকারের কোন স্বচ্ছতা নেই।
প্রধানমন্ত্রী হবার পর নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন সরকারের স্বচ্ছতা থাকবে, কিন্তু সেই স্বচ্ছতা নেই। আগে সরকার এই বিষয়টি স্পষ্ট করুক, তারপর কিছু বলা যাবে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার তলায় তলায় মিটিং করছে বলে অভিযোগ তুলে এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, বুধবার রাতে উত্তরবঙ্গের হাসিমারাতে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গোপন বৈঠক হয়েছে। সেখানে কোন সরকারি আধিকারিক ছিলেন না। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে তাদের গেম প্ল্যান কি হতে চলেছে।
হাসিমারায় প্রশাসনিক বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, যখন রাজতন্ত্র ছিল, তখন এরকম হত, রাজকন্যা, রাজ মহিষী, রাজপুত্র তাদের বিশেষ অধিকার থাকতো। গণতন্ত্রে এরকম কিছু নেই। এরাজ্যের মুখ্য সচিব সহ রাজ্যের যে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা রয়েছেন, তারা তাদের শিরদাঁড়া বিক্রি করে দিয়েছেন। তা না হলে তারা আইন দেখিয়ে বলতেন, কোন বৈঠকে কে থাকতে পারেন, আর কে থাকতে পারেন না।
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিআই(এম) দলের অবস্থান সম্পর্কে সেলিম এদিন বলেন, নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সিপিআই(এম) মাটি কামড়ে গ্রামে গ্রামে পদযাত্রা করার পর এই মুহূর্তে গ্রামে গ্রামে বৈঠকি সভা হচ্ছে। আর তৃণমূল ধাপ্পা দেওয়ার জন্য নতুন কিছু ফন্দি আঁটছে। বোমা বন্দুক কিছু আনা যায় কিনা, এই ব্যবস্থা করছে বিজেপি আর তৃণমূল। অন্যদিকে লাল ঝাণ্ডাধারীরা মানুষকে সংগঠিত করছেন। মানুষ লাল ঝাণ্ডার সঙ্গে আসছেন। গত এক মাসের মধ্যে প্রায় এক হাজার সভা হয়েছে সিপিআই(এম)এর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এটাই মানুষকে নিয়ে প্রস্তুতি।
তৃণমূল এবং বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে এদিন মহম্মদ সেলিম বলেন, বিজেপি আর তৃণমূল এক গোয়ালের গরু, ওরা কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন চায়না। তৃণমূলের মাস্তানরা বিজেপিতে যাচ্ছে, আবার বিজেপির মাস্তানরা তৃণমূলে যাচ্ছে। ত্রিপুরাতেও তাই করেছে, মেঘালয়েও তাই করছে। ত্রিপুরার মানুষ এই গুন্ডামি এবং মাস্তানির বিরুদ্ধে রায় দেবেন। লাল ঝান্ডার নেতৃত্বে লড়াই হচ্ছে। এখানেও তাই লড়াই হবে।
মহম্মদ সেলিম এদিন আরও বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রশাসনকে বলা হয়েছে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রশাসনের একটি বড় অংশ বুঝেছেন আইন মেনে না চললে মমতা ব্যানার্জি তাদের কাউকে রক্ষা করতে পারবেন না। কারণ মমতা ব্যানার্জি নিজেই রক্ষাকবচ খুঁজছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন এবং সাধারণ প্রশাসনের পাশাপাশি সর্বোপরি গণতন্ত্র প্রিয় মানুষ গ্যারান্টি করবেন আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ করার।